দেশকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে নিয়ে যাওয়াই লক্ষ্য: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

সম্পাদক-প্রকাশকঃ মারুফুর রহমান মারুফ
মঙ্গল, 18.09.2018 - 12:37 AM
Share icon
Image

 

সময় ওয়েব ডেস্কঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তাঁর সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। তিনি দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে বাংলাদেশ একটি ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত উদার গণতান্ত্রিক এবং ধর্ম নিরপেক্ষ দেশ এবং রাষ্ট্র ও সমাজের প্রতিটি স্তরে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত এবং গণতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক রুপ লাভ করবে, যেখানে গণমানুষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হবে। আগামী ৩ বছরের মধ্যেই দেশ থেকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্য দূর হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ কেমন হবে সে জন্য দীর্ঘমেয়াদি প্রেক্ষিত পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজ এখনই শুরু হয়েছে। ৬৬% মানুষ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর আস্থাশীল: আইআরআই জরিপ।

মানব উন্নয়ন সূচকে বাংলাদেশের ৩ ধাপ অগ্রগতি

মাথাপিছু আয়, গড় আয়ুসহ বিভিন্ন মাপকাঠিতে উন্নতির পথ ধরে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) মানব উন্নয়ন সূচকে আরও এগিয়েছে বাংলাদেশ। গতবছরের তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে ইউএনডিপি ‘মানব উন্নয়ন প্রতিবেদন-২০১৮’ প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যাচ্ছে, এক বছরে বাংলাদেশের অবস্থানের উন্নতি হয়েছে তিন ধাপ। এবারের প্রতিবেদনে ১৮৯ দেশের মধ্যে বাংলাদেশ রয়েছে ১৩৬তম অবস্থানে। ২০১৭ সালের প্রতিবেদনে বাংলাদেশ ছিল ১৩৯তম অবস্থানে।

চলতি অর্থবছরেই দারিদ্র্যের হার নামবে ২০ শতাংশের নিচে

সরকারের পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি) ২০১৭-১৮ অর্থবছর শেষে দেশে দারিদ্র্যের হার ২১ শতাংশ প্রক্ষেপণ করেছে। এর অর্থ হচ্ছে, বর্তমানে প্রতি ১০ জনে দু'জন মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, কাজের সুযোগ বৃদ্ধি, কৃষির রূপান্তর, যোগাযোগ অবকাঠামোর উন্নয়ন এবং বিদ্যুতায়ন, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির কারণে দারিদ্র্য বিমোচন হচ্ছে। কিছু কিছু এলাকার জন্য বিশেষ কর্মসূচিও দারিদ্র্য বিমোচনে সহায়তা করেছে।

১৮ প্রকল্পের অনুমোদন

মোট ১৮টি প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এসব প্রকল্পে বাস্তবায়নে মোট খরচ ধরা হয়েছে ১৭ হাজার ৭৮৬ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। প্রকল্পগুলোর মধ্যে অন্যতম হল প্রাইমারি হেলথ কেয়ার সার্ভিসেস ডেলিভারি। এ প্রকল্পের মাধ্যমে নগরবাসীদের জন্য মানসম্মত প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা এবং মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্য সম্পর্কিত অপরিহার্য সেবা প্যাকেজের মাধ্যমে গরীবদের সেবা নিশ্চিত করা হবে।

বিদ্যুৎ খাতে ৩৫ কোটি ডলার দিচ্ছে এডিবি

বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নে ৩৫ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে গ্রিড ও সঞ্চালন লাইন সম্প্রসারণে নেওয়া ‘সাউথওয়েস্ট ট্রান্সমিশন গ্রিড এক্সপানশন’ প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হবে এই অর্থ। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৩ কোটি ২০ লাখ ডলার। এডিবি ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) মধ্যে এই ঋণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ১৭ কোটি ৪৫ লাখ ডলারের যোগান দেওয়া হচ্ছে।

১৬৮১ মাদ্রাসার উন্নয়নে ৬ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প

দেশের এক হাজার ৬৮১টি মাদ্রাসার অবকাঠামো উন্নয়নে ৬ হাজার কোটি টাকার একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে সরকার। কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের আওতায় মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর ও শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর মাদ্রাসা উন্নয়ন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। মোট ৫ হাজার ৯১৮ কোটি ৬৩ লাখ টাকার এই প্রকল্পটি ২০২১ সালের মধ্যে বাস্তবায়িত হবে। এর পুরো অর্থই সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে জোগান দেওয়া হবে।

একশ বছরের ডেল্টা প্ল্যান অনুমোদিত

ডেল্টা প্ল্যান বা ব-দ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রায় শত বছরব্যাপী এই পরিকল্পনার মাধ্যমে বন্যা, নদী ভাঙন, নদী শাসন, নদী ব্যবস্থাপনা, নগর ও গ্রামে পানি সরবরাহ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, নগর বন্যা নিয়ন্ত্রণ এবং নিষ্কাশন ব্যবস্থাপনায় দীর্ঘমেয়াদি কৌশল নির্ধারণ করা হয়েছে। একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রযুক্তিগত, কারিগরি ও আর্থ-সামাজিক দলিল এই পরিকল্পনা। প্রধানমন্ত্রীর আগ্রহ, ইচ্ছা ও নির্দেশে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) পক্ষ থেকে এই পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে।

বিনিয়োগ ও প্রণোদনার সুযোগ বাড়িয়ে বস্ত্র বিল পাস

দেশের বস্ত্রখাতের ‘টেকসই উন্নয়নের’ লক্ষ্যে নতুন আইন করার প্রস্তাব সংসদে পাস হয়েছে। রাষ্ট্রায়ত্ব মিলগুলোর ব্যবস্থাপনা, তদারকি ও আধুনিয়কায়নের সুযোগ রাখার পাশাপাশি উপকরণের মান নিয়ন্ত্রণ, তদারকি ও সমন্বয়, কাঁচামাল আমদানি ও রপ্তানি, নিরাপত্তা ও কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে এ আইনে। বস্ত্রখাতে দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়নের লক্ষ্যে বিদ্যমান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর পাশাপাশি নতুন বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, ইনস্টিটিউট এবং প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপনেরও সুযোগ রাখা হয়েছে।

কৃষিতে ৯ বছরে ৬০ হাজার ২৬৮ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ভর্তুকি

কৃষি ও খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে সরকার বিগত ৯ বছরে ৬০ হাজার ২৬৮ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ভর্তুকি প্রদান করেছে। সরকার পানি, মাটি, পুষ্টি ব্যবস্থাপনা এবং কৃষিতে প্রযুক্তি উন্নয়ন ঘটাতে বিভিন্ন প্রকল্প, নতুন জাতের ধান আবিস্কার, সবজি বীজ, পানি সংরক্ষণে মিনি পুকুর খননসহ নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। কৃষকদের উৎসাহিত করার কারণে বর্তমানে বাংলাদেশ বিশ্বে ধান উৎপানে ৪র্থ, সবজি উৎপাদনে ৩য় এবং আলু উৎপাদনে ৭ম স্থান অবস্থানকারী দেশ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।

 

 

Share icon