শেরপুরে হুইপ আতিককে নিয়ে নোংরা ষড়যন্ত্র॥ ছড়ানো হচ্ছে ভুয়া অডিও ক্লিপ
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নকে সামনে রেখে জাতীয় সংসদের হুইপ, শেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আতিউর রহমান আতিক এমপির বিরুদ্ধে নোংরা ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে।
ওই ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে হুইপ আতিকের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে একটি প্রভাবশালী মহল তাদের অনুসারীদের দিয়ে এক নারীর সাথে মোবাইলে কথোপকথনের অডিও ক্লিপে ছবি জুড়ে দিয়ে সুপার এডিট করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়াচ্ছে। কেবল তাই নয়, সেই ভুয়া অডিও ক্লিপের সূত্র ধরে এবং প্রভাবশালীদের তদবিরে একাধিক পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে খবর প্রকাশিত হয়েছে। এর মাধ্যমে হুইপ আতিকের চরিত্র হননের অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে।
অন্যদিকে টানা ৫ দফায় নির্বাচিত জনপ্রিয় সংসদ সদস্য হুইপ আতিউর রহমান আতিকের বিরুদ্ধে ওই নোংরা ষড়যন্ত্রের ঘটনায় দলীয় নেতা-কর্মীসহ সচেতন মহলে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। সেইসাথে এলাকায় উঠেছে প্রতিবাদের ঝড়।
অভিযোগ রয়েছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এবারেরও প্রধান মনোনয়নপ্রত্যাশী হুইপ আতিউর রহমান আতিককে কুপোকাত করতে বিবদমান প্রভাবশালী একটি অংশ সভা-সমাবেশে বক্তৃতায়সহ নানাভাবে গালিগালাজ ও হুমকীর পাশাপাশি ষড়যন্ত্র করে আসছে।
জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘনিয়ে আসায় এবং দলীয় মনোনয়ন চূড়ান্ত করার শেষ মুহূর্তে তারা শেষ আঘাত হানতে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। ওই অবস্থায় ২০ নভেম্বর সোমবার রাতে বিবদমান একটি প্রভাবশালী বলয়ের অনুসারীরা নিজেদের ফেসবুক পেইজে হুইপ আতিকের নাম উল্লেখ না করে ইশারা-ইঙ্গিতে নানা নোংরা কথাবার্তা ছড়াতে থাকে। এক পর্যায়ে তারা হুইপ আতিকের সাথে এক নারীর কথোপকথনের সুপার এডিট করা অডিও ক্লিপ প্রথমে সাইদ অন্তর নামে একটি ফেসবুক আইডিতে আপলোড করে ছড়ানো হয়।
পরবর্তীতে তা রিমুভ করা হলেও ষড়যন্ত্রকারীরা শতশত ফেসবুক ব্যবহারকারীর মেসেঞ্জারে ও মোবাইলে ছড়াতে থাকে। বিষয়টি রাতেই দলীয় অঙ্গনসহ নানা মহলে জানাজানি হয়ে পড়লে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। কিন্তু মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর বিষয়টি খবর আকারে প্রকাশিত হলে দলীয় অঙ্গনসহ বিভিন্ন মহলে ক্ষোভের পাশাপাশি প্রতিবাদের ঝড় উঠে।
এদিকে হুইপ আতিউর রহমান আতিককে জড়িয়ে সুপার এডিটেড ওই অডিও ক্লিপ ছড়ানোর মাধ্যমে ষড়যন্ত্রের ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে শহর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শোয়েব হাসান শাকিল বাদী হয়ে শেরপুর সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেছেন। আর ওই নোংরা ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদ জানিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি ফখরুল মজিদ খোকন ও মিনহাজ উদ্দিন মিনাল, শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রকাশ দত্ত, সাবেক সভাপতি এ্যাডভোকেট আবুল কাশেম জিপি, সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল হাসান উৎপল, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আওলাদুল ইসলাম, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলামসহ অনেক দলীয় নেতা।
এছাড়া পেশাজীবী সংগঠনের পক্ষে শেরপুর চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি আলহাজ্ব মো. আসাদুজ্জামান রওশন, সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার এ্যাডভোকেট মোখলেছুর রহমান আকন্দ, জেলা বিএমএ’র সভাপতি ডা. এমএ বারেক তোতা, প্রেসক্লাবের সভাপতি রফিকুল ইসলাম আধার, সাবেক সভাপতি মো. শরিফুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আদিল মাহমুদ উজ্জল, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মানিক দত্ত, জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট মমতাজ উদ্দিন মুন্না, জেলা ট্রাক-ট্যাংক লড়ি শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আরিফ রেজা, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিনয় সাহা, জেলা চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শামীম হোসেনসহ অনেকেই।
তারা বলেন, হুইপ আতিক শেরপুরের উন্নয়নের কাণ্ডারি। কাজেই সকল ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে আগামী দিনেও শেরপুরবাসী তাকে নিয়েই স্বপ্ন দেখছে। তাই তার বিরুদ্ধে যে কোন ষড়যন্ত্রে শেরপুরবাসী রুখে দাঁড়াবে।
সুপার এডিটের মাধ্যমে ভিডিও ক্লিপ ছড়ানোর ঘটনায় হুইপ আতিউর রহমান আতিক তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে গণমাধ্যমকে বলেন, আমার উন্নয়ন ও জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে দলের একটি অংশ বেশ কিছুদিন ধরেই প্রকাশ্যে ষড়যন্ত্র করে আসছে। তারা সভা-সমাবেশেও নগ্ন ভাষায় গালিগালাজ করছে। তারপরও আমাকে কুপোকাত করতে না পেরে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে চূড়ান্ত ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। তারই অংশ হিসেবে এবার তারা সুপার এডিটের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অডিও ক্লিপ ছড়াচ্ছে।
তিনি বলেন, শান্ত শেরপুরের পরিস্থিতি ঘোলাটে করতে সভা-সমাবেশে যারা প্রকাশ্যে হুমকী-ধামকী দিয়ে আসছে, এ নোংরা ষড়যন্ত্র তাদেরই। তিনি ওই ষড়যন্ত্রের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে সর্বস্তরের দলীয় নেতা-কর্মীদের সজাগ ও সতর্ক থাকার পাশাপাশি রুখে দাঁড়াতে প্রস্তুত থাকার আহবান জানান।
সেইসাথে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ওই ভুয়া অডিও ক্লিপ ছড়ানোর ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর অন্যান্য দপ্তরের প্রতিও আহবান জানান।
এ ব্যাপারে শেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বছির আহমেদ বাদল মঙ্গলবার রাতে গণমাধ্যমকে জানান, ওই ঘটনায় সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী রুজু হয়েছে। তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত ও আইনের আওতায় নিয়ে আসার প্রক্রিয়া চলছে।